আমি চলে যাই
- মকিজুর রহমান - মুক্তবীণা ২৮-০৪-২০২৪

যৌবনে চাইবার ছিলো বহু কিছু;
কিন্তু,
সভ্যতার মণিবন্ধে মানবের অবলুপ্তির
কালের স্রোতে কিছুই হল না।
আমি চলে যাব, আসবো না আর ফিরে;
শুধু মাঝ পথে একটু থেমে যাই,
হাত বাড়িয়ে তোমাকে ছুতে,
না, আমি ফিরে আসব না,
আমার কোন গন্তব্য নেই;
আমি এই অজনা পৃথিবীর ধূসর মেরুর পথে,
হেঁটেছি জন্ম থেকে আজ অবধি;
চলে যাব,
আমি আর আসব না ফিরে!
পুরনো এই শহর ছেড়ে,বহুদূর চলে যাব
আমার সমীকরণ মিলিয়ে দেখি,
চারিদিকে চলেছে ধ্বংসের লীলাখেলা
তড়িঘড়ি করে পাল্টে যাচ্ছে পৃথিবী
ফিরে গিয়েছে বিশ্বাসের মঙ্গল সূত্র
তোমাদের অট্টালিকা ছুয়েছে আকাশ,
জানালা দিয়ে অবিরত পড়েছে গোলা বারুদ,
আর রক্তে ভেজা ছাই;
কানে ভেসে আসে কান্নার চিৎকার,
আমি কানে আঙুল দিয়ে চলে যাই বহুদুর।
আবার থেমে ফিরে আসি,
এক্ষুনি; ঝরে গেল কত প্রাণ।
মানুষের মোবাইলে সংরক্ষণ আছে
কত জীবনের মূত্যুর ফাঁদ;
সে ফাঁদে আকটে ঝরে পড়ে কত জীবন।
আমাদের চোখের পলক এড়িয়ে
কি নেশায় মেতেছে মানুষ?
কি আশায় আমি ফিরে যাই!
আমি চলে যাব,
আমার কোন গন্তব্যে নেই,তবুও
ধীরে ধীরে পায়ে হেটে
জন্ম থেকে আজ অবধি,কতদিন কতকাল,
আমার জীবনের দিনগুলো একটি
দু’টি
তিনটি করে পার হল কতদিন!
তারপর চলে গেছে তিরিশ বছর।


আমি বলে যাচ্ছি ;
তোমাদের এই দেশ নষ্টদের অধিকারে চলে যাবে,
আমি বলে যাচ্ছি ;
তোমাদের সন্তান হবে তোমাদের মূত্যুর কারন,
এবং তোমরা হারিয়ে ফেলবে মনুষ্যত্ব
তোমারা অযথা করবে হত্যাকান্ড
তোমরা ভুলে যাবে আপন পিতা মাতার অধিকার,
তোমাদের প্রতি ঘরে দলনেতা নির্বচনের জন্য ভোট হবে,
এবং ভাইয়ে ভাইয়ে হবে তুমুল যুদ্ধ ;
তোমাদের থাকবে না বেতার সংবাদ
তোমারদের থাকবে না সংবাদ পত্র
তোমাদের থাকবে টেলিভিশন
কিন্তু সব হবে পুরাতন অচল
তোমাদের মোবাইলে চলবো সকল লেনদেন।

তোমরা ভালোবেসে পাবে কষ্ট
তোমাদের ব্যাংক সঞ্চয় থাকবে
তোমাদের সংসদ থাকবে
তোমাদের পরিবার থাকবে
কেবল তোমরা হয়ে যাবে মানবতা হীন উম্মদ।

আমি হেটে যাই বহুদুর,
আমার কোন গন্তব্য নেই
আমার কোন ঠিকনা নেই
আমার কোন ঘরবাড়ি নেই
আমার কোন পরিবার নেই
আমার কেউ পরিচিত নেই
আমি এক বিরহী যাযাবর।
পৃথিবীতে সমস্ত খোলা আকাশ আমার মাথার উপর ছাদ,
প্রত্যেক শহরে আমার বসবাস
আমি চলে যাই যেদিকে দুচোখ যায়।

তোমাদের শান্তি থাকবে না
তোমাদের ঘরে জ্বলবে আগুন
তোমাদের অর্থনীতি স্বচ্ছলতা থাকবে না
তোমাদের কোন শৃঙ্খলা থাকবে না
তোমাদের কোনো বিবেক থাকবে না
তোমাদের কোন কর্ম থাকবে না
তোমরা হয়ে যাবে হিংস্র মানব।
আমার জানি,
তোমাদের সন্তানদের থাকবে না কোন অধিকার।
কেবল চারিদিকে থাকবে অনিয়ম অত্যাচার।

হাজার বছর ধরে চলেছে!
কত যুদ্ধ –সংগ্রাম, একটু শান্তির জন্য
একটি স্বাধীনতার জন্য,হাজার গণহত্যা
একটি পতাকার জন্য কত শহীদ
আমার হৃদয়ে বীভৎস ক্ষত আগ্নদন্ডে
আমি আর পারছি না,
এগিয়ে চলেছি-
একটু শান্তির আশায়,
চারিদিক কেবল যুদ্ধ।

আমি সামনে অগ্রসর হই
আবার একটুখানি থামে যাই
আমার চোখের সমানে পড়ে আছে ছেঁড়া
এক টুকরো কাগজ
যার ভেতরে বন্দী রক্তে লেখা প্রিয় স্বাধীনাতা,
আমার বড় ইচ্ছে হয়,আমি লিখে যাই একটি কবিতা,
তাই আমার একটু পিছনে ফিরে এসে
দেখি লাশে ঢালাই ছাদ,
রক্তের গন্ধ
আমার স্বপ্ন ভেঙে যায়
আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখি।

একান্ত একটি রাতে,আমাকে ডাকছে কেউ
আমি চলে যাব,
আমার একটি কবিতায় আমার দুঃখের কথা বলে গেলেম,
যদি নতুন ভোরের সম্ভাবনা দেখা যায়
আমাকে ক্ষমা করে দিও।

আমি আজ রপন করে গেলাম কিছু চারাগাছ,
হেসে খেলে যদি তারা আকাশ ছুয়ে যায়
তাহলে থাকবেনা কোন দুঃখ।
একটি পথ শিশুর মুখে একমুঠে ভাত
একটি সুন্দর রাষ্ট্র,
একটি সুন্দর বিচারালয়
একজন সুন্দর বিচারক
আমার স্বাধীনাতা টিকে থাক,
আমি সামনের দিকে হই আগ্রসর
যেমন এগিয়ে এসেছি
হাজার বছর
কতকাল
আমার জীবনের দিনগুলো একটি
দু’টি
তিনটি করে পার হল বিদায়ের কাল,
সর্বকাল আমি কেবল করেছি যুদ্ধ সংগ্রাম,
আমি চলে যাই সীমনা ছেড়ে,
যেখান থেকে আমার ফেরার নেই কোন পথ।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।